বিএনপির নির্বাচন বিমুখতা গণতন্ত্র বিমুখতারই শামিল : তথ্যমন্ত্রী

 

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপির নির্বাচন বিমুখতা গণতন্ত্র বিমুখতারই শামিল। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়ানো বিএনপির জন্য শুভ হচ্ছে না, হয়নি। বিএনপির এই নির্বাচন বিমুখতা আসলে গণতন্ত্র বিমুখতারই শামিল।’  
মন্ত্রী আজ দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবে না বলেছে -এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চাই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনসহ সমস্ত নির্বাচনে বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করুক। তবে যে কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি করবে না, সেটি তাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কিন্তু বিএনপির মধ্যে সবসময়ই নির্বাচন নিয়ে দোদুল্যমানতা থাকে। তারা কোনো কোনো সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছে, আবার কোনো কোনোটায় অংশগ্রহণ করে নাই। এই দোদুল্যমানতাই বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তাদের আন্দোলনের অংশ হিসেবেও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে পারতো, তাদের জন্য সেটি ভালো হতো এবং তারা তাদের জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারতো। নির্বাচন কি রকম হচ্ছে সেটিও তারা পরখ করতে পারতো। আপনারা দেখেছেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কি রকম প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়েছে। অর্থাৎ এই সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনগুলো অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ হবে সেটি নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যেই নিশ্চিত করেছে এবং সরকার সবসময় নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করছে। সুতরাং বিএনপি যদি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সেটিই তাদের জন্য মঙ্গলজনক, গণতন্ত্রের জন্যও মঙ্গলজনক।’
গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, ভারতে পিআইবিকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে কোন সংবাদটা ঠিক, কোন সংবাদটা ঠিক নয়, সেটি তারা চেক করবে। যখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হবে- এই সংবাদটা ঠিক নয়, সেটি সংবাদ প্রচারকারিকে নিজ দায়িত্বে সরিয়ে নিতে হবে এবং সরিয়ে না নিলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের দেশে এ রকম কোনো ব্যবস্থা আমরা নেইনি। তার মানে এই যে, আমাদের দেশে গণমাধ্যম পার্শ্ববর্তী ভারতের চেয়েও অনেক বেশি স্বাধীনভাবে কাজ করে, স্বাধীনতা ভোগ করে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সম্প্রতি ভারতে ট্যাক্স অফিসের পক্ষ থেকে বিবিসির কার্যালয়ে কয়েকদিন ধরে তল্লাশি চালানো হয়েছে। আমাদের কোনো পত্রিকা কিম্বা টেলিভিশনে তো ট্যাক্স অফিসের কেউ যায়নি এখনো। প্রথম আলোতেও যায়নি এখনো। যদিওবা প্রথম আলোর সাম্প্রতিক একটা রিপোর্ট নিয়ে হৈচৈ বেঁধেছে। এই রিপোর্টটা অবশ্যই আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বকে খাটো করেছে। সে কারণেই প্রথম আলো সরিয়ে নিয়েছে। কিন্তু অনলাইনে সরিয়ে নিলেও তো সরে না। সেটি নিয়ে দেশে নানা জায়গায় মানববন্ধন হয়েছে। দেশের সকল সাংবাদিক সংগঠন প্রথমবারের মতো একটি পত্রিকার রিপোর্টের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। আগে কখনো কোনো পত্রিকার রিপোর্টের বিরুদ্ধে দেশে সমস্ত সাংবাদিক সংগঠন বিবৃতি দেয় নাই, এই প্রথমবার দিয়েছে, কারণ এখানে ভুল হয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, প্রথম আলো এখনো ভুল স্বীকার করে নাই।’
এ বছর রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য যে হারে বৃদ্ধির আশংকা ছিলো, তা রোধ করা গেছে -এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবার যখন রমজান, ঈদ, পূজা আসে তখন আমাদের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী মজুতদার দ্রব্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। এবারও সেই অপতৎপরতা ছিলো কিন্তু সরকারের নানামুখী তৎপরতা, ভোক্তা অধিকার সংস্থার নানামুখী কার্যক্রম এবং এফবিসিসিআই সোচ্চার থাকার কারণে তেমনটি হয়নি, কোনো কোনো পণ্যের মূল্য কমেছে যেমন মুরগির দাম যেমন অনেক বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল সেটি কমেছে।’

(বাসস)

Previous Post Next Post