ঈদের আগে ছুটি নিয়ে সুখবর দিল সরকার। এবার ঈদের ছুটি এক দিন বাড়ছে। এ জন্য ২০ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এর ফলে আসলে ছুটি শুরু হয়ে যাবে ১৯ এপ্রিল থেকেই। কারণ ১৯ এপ্রিল পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে ছুটি। এর মানে এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি কমপক্ষে পাঁচদিন হচ্ছে। তবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ৩০ রোজা পূর্ণ হওয়ার পর পবিত্র ঈদ হলে, ছুটি আরও একদিন বাড়বে।
আজ সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২০ এপ্রিল নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। সকালে জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে সভার সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯ এপ্রিল বুধবার পবিত্র শবে কদরের ছুটি। সে ক্ষেত্রে ঈদের আগে একদিন অর্থাৎ ২০ এপ্রিল খোলা থাকে। তাই মানুষের যাতায়াত যাতে নির্বিঘ্নে হয়, যাতায়াতটি যাতে আরামদায়ক হয় সে জন্য ২০ এপ্রিলও নির্বাহী আদেশে ছুটি ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মো. মাহবুব হোসেন বলেন, মন্ত্রিসভা আজ ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন ( ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন, ২০২৩’র খসড়ারও চুড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে । তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে, সেটি অপরাধ হবে। আর এ জন্য সর্ব্বোচ্চ সাজা হবে যাবজ্জীবন কারাদন্ড বা ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড। এ ছাড়া অর্থদন্ডও হতে পারে। তবে অর্থদন্ড নির্ধারণ করবে আদালত। প্রস্তাবিত আইনটিতে খাদ্যদ্রব্য মজুতের ওপর বেশি কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। কোনো ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত পরিমাণের বেশি খাদ্যদ্রব্য মজুত করলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের নির্দেশনা অমান্য করলে সব্বোচ্চ সাজা পাবেন। অবশ্য শর্ত হিসেবে আইনের খসড়ায় বলা হয়েছে, এসব অপরাধে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তি যদি প্রমাণ করতে পারেন যে তিনি আর্থিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে লাভবানের জন্য মজুত করেননি, তাহলে তাঁর অনধিক তিন মাস কারাদন্ড বা অর্থদন্ড হবে। খাদ্যের মজুত নিয়ে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করলেও সাজা পেতে হবে। এ বিষয়ে প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহন, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন সম্পর্কে কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ ও বিতরণ করলে পাঁচ বছর কারাদন্ড বা ১৫ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড হতে পারে। প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন ও বিপনণ সংক্রান্ত অপরাধের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য হতে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে ওই ধরনের জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করে, ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপনণ করলে বা খাদ্যদ্রব্যের স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিক অপসারণ বা পরিবর্তন করে উৎপাদন বা বিপনণ করলে সেটি অপরাধ হবে। এ ছাড়া খাদ্যদ্রব্যের সঙ্গে মানবস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদান মিশ্রন করে উৎপাদন ও বিপনণ করলে, সেটিও হবে অপরাধ। লাইসেন্স ছাড়া বা মেয়াদ উত্তীর্ণ লাইসেন্স দিয়ে চললেও তা অপরাধ হবে। আর এসব অপরাধের জন্য দুই বছর কারাদন্ড অথবা অন্যুন ১০ লাখ টাকা অর্থদন্ড বা উভয়দন্ড হতে হবে। এভাবে বিভিন্ন অপরাধের জন্য ভিন্ন ভিন্ন সাজার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া মন্ত্রিসভার আজকের বৈঠকে ‘বাংলাদেশ ডেইরি বোর্ড আইন,২০২৩’ এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই আইন জাতীয় সংসদে পাস হলে, ডেইরি সংক্রান্ত বিষয়াদি ব্যবস্থাপনার জন্য বাংলাদেশ ডেইরি উন্নয়ন বোর্ড নামে নতুন একটি প্রতিষ্ঠান হবে। পদাধিকার বলে এই বোর্ডের প্রধান হবেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী। এই বোর্ডের মোট সদস্য সংখ্যা হবে ১৯ জন। সরকারি ও বেসরকারিভাবে যারাই বাণিজ্যিকভাবে দুধ উৎপাদন করবে বা দুগ্ধজাত খাদ্য উৎপাদন করবে, তাদের সকলকে এই বোর্ডের আওতায় আসতে হবে।